সুমন গাজী
গাজীপুর প্রতিনিধি :
জিএমপি গাজীপুর সদর থানা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে অনলাইন জুয়া চক্রের ৪ সদস্যকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন- লক্ষিপুরার মুক্তারটেক এলাকার আঃ মান্নানের বাড়ির ভাড়াটিয়া মোঃ সোহেল (২৮), তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানা এলাকার চরনাসিরপুর গ্রামে। পিতার নাম মৃত কুদ্দুস হাওলাদার, গাজীপুর জজকোর্ট সংলগ্ন টাঙ্কিরপাড় এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫), পূর্ব চান্দনার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে মোঃ রেজাউল হাসান ওরফে রিয়াজ (৩৪) ও ভোড়া চৌকিদার বাড়ির মৃত গোলাম কিবরিয়ার ছেলে মোঃ মাসুম (২৫)। গ্রেফতারকৃতদের মোবাইল, বিকাশ, রকেট ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন- গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, বাংলাদেশে অবৈধ অনলাইন জুয়ার প্লাটফর্ম ৩৬৫ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে ব্রাউজার ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজের উঠতি বয়সের যুবকদের আসক্ত করে বিদেশে পাচার করে নেয়া হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। তারা মালোয়েশিয়া/দুবাই এর মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে খুলে নিজেদের প্রকৃত পরিচয় গোপন করে যোগাযোগ করে থাকে। এই সার্ভারটি প্রধানত নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এ্যাডমিন আকাশ মালিক @ রনি (বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত পুবাই প্রবাসী)। তিনি এটিকে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশী নাম্বার ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশের ৫টি লেয়ারে তথা (১) এ্যাডমিন, (২) সাইট সাব এ্যাডমিন, (৩) সুপার এজেন্ট, (৪) মাষ্টার এজেন্ট ও (৫) ইউজার (ট লেভেলের ব্যবহারকারী) লেয়ারে বিভক্ত করে। প্রতিটি লেয়ার তার উপরের লেয়ারের মাধ্যমে কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে।
এই ডিজিটাল কয়েন লেনদেন মূলত সারা বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট, ফুটকালীগ, টেনিস এবং বর্তমানে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার মাধ্যমেও প্রধানত অনলাইনে জুয়া খেলা হয়। ব্যবহারকারী জয়ী হলে ডিজিটাল কনে ফেরত নিয়ে এর বিপরীতে আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে থাকে। হারলে তার পুরো ডিজিটাল কয়েনটাই পর্যায়ক্রমে জুয়া পরিচালনাকারীর কাছে জমা হয়ে যায়। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল, মেসেঞ্জার, হোয়টাসখাপ চ্যাটিং ও এমএফএস (বিকাশ/নগদ /রকেট) যাচাই করে দেখা যায় যে, বিপুল পরিমান ই ব্যাংকিং এর মাধ্যমে লেনদেনকৃত টাকা বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। ফলে দেশ হতে পাচার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। এ সংক্রান্তে সদর থানা, জিএমপি কর্তৃক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এ মামলা রুজু এবং সিআইডি কর্তৃক মানি লন্ডারিং আইনে মামলা গ্রহণের ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশনায় সকল প্রকার অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।